এস.এম.শামীম দিঘলিয়া, খুলনা।
খুলনার দিঘলিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার মোড়লকে
অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা
সরকারি জমি বিক্রি, আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণে ব্যাপক দুর্নীতি, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাত ও আলোচিত খুলনার শেখ পরিবারের আস্থাভাজন দিঘলিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হায়দার মোড়লকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে এলাকাবাসী। বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের অডিটোরিয়ামে প্রতিবাদ সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক হয়ে উপজেলা প্রদক্ষিণ শেষে চৌরাস্তা মোড়ে শেষ হয়। অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর দাবীকে প্রত্যাখ্যান করে বুধবার ইউপির নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করায় এলাকাবাসী এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বলে জানা গেছে।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারী তার অপসারণের দাবিতে খুলনার জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এদিকে, দিঘলিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়লের অপসারণের দাবিতে ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষ এক প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে এলাকাবাসী। প্রতিবাদ সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা চৌরাস্তা মোড়ে শেষ হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডা: হাফিজুর রহমান, জুয়েল বিশ্বাস, আল মামুন নিপু, খান মোহাম্মদ, সোহেল পারভেজ কাকন, মোহাম্মদ সাজ্জাদ মোল্লা, শেখ আরিফুল ইসলাম, তৈয়ব মোল্লা, সেলিম রেজা, সেলিম মোড়ল, আব্দুস সাত্তার, মনিরুল মোড়ল, আলামিন মোল্লা, শরিফুল, আব্দুল ওহাব, মোতালেব ফকির, শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, মোঃ কুতুব উদ্দিন, শেখ জুয়েল, শেখ মিল্টন, রাজু আহমেদ,লোকমান মোল্লা, কুদ্দুস খান, মনিরুল মোড়ল, রহিম শেখ, গোলাম মোল্লা, আলমাত শেখ প্রমুখ।
স্থানীয় বাসিন্দা ডা. হাফিজুর রহমান, শেখ সাজ্জাদ মোল্লা, লাল মামুর নিপু, রহিম শেখ ও আলমাত শেখসহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়লের বিরুদ্ধে স্ট্যাম্পে চুক্তি করে সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত জমির পজিশন বিক্রি করে মোটা অংকের অর্থ আদায়, আশ্রায়ন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাত, টিআর-কাবিটা প্রকল্পের কাজে নয়-ছয় করে অর্থ আত্মসাত, গভীর নলকূপের বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, এলজি এসপি প্রকল্প, হাট বাজার, উন্নয়ন তহবিল, উপজেলা পরিষদের বরাদ্দ ও কর্মসৃজন প্রকল্পসহ সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে টিআর-কাবিটা প্রকল্পে পুরাতন ইট ব্যবহার করে ও ৪০ দিনের কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে কাজ জোড়া-তালি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। তিনি শেখ পরিবারের কাছ থেকে ১০% কমিশন দিয়ে বহু ঠিকাদারী কাজ বাগিয়ে নিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনাসহ তার দোসররা দেশ ছেড়ে পালালেও আওয়ামী লীগের দোসর আলোচিত এই ইউপি চেয়ারম্যান এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এ কারণে ২ ফেব্রুয়ারি তার অপসারণ ও গ্রেফতারের দাবিতে স্থানীয় জনগণ বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সভা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন। কিন্তু চেয়ারম্যান হায়দার আলী মোড়ল জনগণের এ দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বুধবার ইউনিয়ন পরিষদের নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে এলাকাবাসী তার সংবাদ সম্মেলন বানচাল করে দেয়। একই সঙ্গে তার অপসারনের দাবিতে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অবিলম্বে তাকে অপসারণ করা না হলে ইউনিয়নের বাসিন্দারা আরো কঠোর কর্মসূচি পালন করতে বাধ্য হবে বলেও তারা উল্লেখ করেন। যদিও এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান হায়দার আলীর সঙ্গে তার সেলফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, তিনি বুধবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করলেও এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে তা স্থগিত করতে বাধ্য হন।