শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনা বাংলার চেতনা নিউজ।
ডুমুরিয়া (খুলনা) ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে রেখে খুলনা জেলার নয়টি উপজেলায় প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পী বা ‘পাল’ সম্প্রদায়ের লোকজন। পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে ২ অক্টোবর।
পূজা শুরুর মাত্র ১২ দিন বাকি আছে। এমন অবস্থায় সময়মতো প্রতিমা সরবরাহ নিশ্চিত করতে পালরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। এ বছর মণ্ডপের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তারা আগের তুলনায় ভালো আয়ের আশা করছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া ইউনিয়নের টিপনা পাল পাড়ার মন্দিরের প্রতিমা কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিমা শিল্পী গৌর কুমার পাল জানান, কাদা, দড়ি, খড়, বাঁশ ও পাটের মতো কাঁচামালের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘একটি বড় প্রতিমা তৈরিতে পাঁচ থেকে আটজন কর্মীর প্রায় ১২ থেকে ১৬ দিন সময় লাগে, আর ছোট প্রতিমা তৈরি করতেও প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগে।
দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে প্রতিমা বানানোর সঙ্গে যুক্ত গৌর কুমার পাল গত দুই মাসে ইতোমধ্যেই ৫টি প্রতিমা বানিয়েছেন। প্রতিমার কাজ২টি শেষ করছেন। তিনি জানান, প্রতিটি প্রতিমার মূল্য ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে।
তার ধারণা, ডুমুরিয়ায় বর্তমানে প্রায় ১০০টি পাল দল প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন এবং প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।
টিপনা মন্দির কমিটির প্রবিন সভাপতি নিরান্জন পাল বলেন এ বছর অনেক প্রতিমা তৈরিতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে এবং দেবী আসল শাড়ি ও অলংকারে সজ্জিত থাকবেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি নিত্যনন্দন মন্ডল বলেন, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া এবং পাল, পুরোহিত ও ঢাকি সব কিছু মিলিয়ে এ বছর খরচ অনেক বেশি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর ‘শুভ মহালয়া’র মধ্য দিয়ে ধর্মীয় কার্যক্রম শুরু হবে এবং ২৭ সেপ্টেম্বর শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।
খুলনা জেলায় ৯৬৫টিরও বেশি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে, এর মধ্যে খুলনা শহরে রয়েছে ১২০টি মণ্ডপ। চার শতাধিক পাল এ কাজে যুক্ত রয়েছেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ আল আমিন বলেন
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা ও মণ্ডপের প্রস্তুতিতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি তৈরি হবে।
উৎসবের আগে আমরা তাদের কাছে মতবিনিময় সভা আয়োজন, কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পূজা মণ্ডপ এলাকা ও রাস্তা পরিষ্কার রাখা এবং বিজয়া দশমীর রাতে শান্তিপূর্ণ প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানিয়েছি। পাশাপাশি সব কমিটিকে নিজেদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি যাতে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো যায়।।