নিজস্ব প্রতিবেধকঃ
খুলনা মহানগরীতে মশার উপদ্রব দিন দিন চরম আকার ধারণ করেছে। নগরবাসীর অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম অপ্রতুল হওয়ায় মশার উৎপাত রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই মশার দল ঘরে-বাইরে মানুষকে অতিষ্ঠ করে তোলে।
জানা গেছে, নগরীর বিভিন্ন ড্রেন, নালা এবং ফাঁকা স্থানে জমে থাকা পানিতে মশার ব্যাপক প্রজনন ঘটছে। বিশেষ করে দৌলতপুর, খালিশপুর, শিববাড়ি এবং সোনাডাঙ্গা এলাকায় মশার উৎপাত সবচেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য বিভাগও জানিয়েছে, এডিস মশা থেকে ডেঙ্গু এবং কিউলেক্স মশার কারণে ফাইলেরিয়ার মতো রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ
খালিশপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মান্নান বলেন, “মশার কামড়ে সন্ধ্যার পর ঘরে থাকা যায় না। মশার স্প্রে আর কয়েলেও তেমন কোনো লাভ হয় না।”
সোনাডাঙ্গা এলাকার গৃহিণী সালমা আক্তার বলেন, “বাচ্চারা রাতে ঘুমাতে পারে না। পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। আমরা সিটি করপোরেশনের ফগিং কার্যক্রম নিয়মিত দেখতে চাই।”
সিটি করপোরেশনের ভূমিকা
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) জানিয়েছে, মশা নিয়ন্ত্রণে ফগিং মেশিন ব্যবহার এবং লার্ভিসাইড ছিটানোর কার্যক্রম চলমান। তবে পর্যাপ্ত জনবল ও সরঞ্জামের অভাবে কার্যক্রমে গতি আনা সম্ভব হচ্ছে না। কেসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, “নগরবাসীকে সচেতন হতে হবে। জমে থাকা পানি পরিষ্কার এবং বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নাগরিকদেরও নিতে হবে।”
স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, খুলনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। চলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
করণীয়
১. ড্রেন ও নালা পরিষ্কার করার উদ্যোগ বাড়াতে হবে।
২. বাড়ি এবং আশপাশে জমে থাকা পানি অপসারণ করতে হবে।
৩. সিটি করপোরেশনের ফগিং কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
৪. নগরবাসীকে সচেতন করতে প্রচারণা চালানো জরুরি।
খুলনা নগরবাসী এখন মশার উৎপাত থেকে মুক্তি পেতে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগের প্রত্যাশা করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং নাগরিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে এ সংকটের সমাধান করতে।