বিশেষ প্রতিবেদন : একজন জীবন্ত মানুষ’কে ময়লার ঝুড়িতে করে ফেলে দেওয়া হলো রাস্তার পাশের ডাস্টবিনে, চলন্ত ট্রাকের চাকায় কুকুরের মতো পিষ্ট হয় মানুষটির মাথা; মুহূর্তেই নির্মম মৃত্যু ঘটে অঙ্গহীন অসহায় মানুষটির সেইসাথে মৃত্যু ঘটলো মানবতার দেবতা সভ্যতার…
মৃত্যুর সময় অসুস্থতায় কাতর বিকলাঙ্গ লোকটির বাঁচার যে আকুতি হয়তো এই পৃথিবীর কেউ শুনতে পায়নি, নিরবে চলে গেলেন মানবতার মুখে লাথি মেরে…
রাজধানী’র মিরপুরে অবস্থিত হযরত শাহ আলী (রহঃ) মাজার শরীফে অজ্ঞাতনামা বিকলাঙ্গ এক পাগলের মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে বেরিয়ে এলো এমন অমানবিক চরম বর্বরোচিত অবর্ণনীয় একটি ঘটনা। নিষ্ঠুর, নির্মম, বর্বরোচিত ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় মরিয়া অপরাধী চক্রের সদস্যরা।
মাজার শরীফের একজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, অজ্ঞাতনামা অসুস্থ পাগল লোকটি দীর্ঘদিন যাবত এই মাজার প্রাঙ্গণে ছিলেন। প্রথমদিকে পুকুর ঘাটের কাছে শুয়ে থাকতেন। লোকটির একটি পা ছিলোনা, হাত দুটিও ছিলো অকেজো। কোথাও যেতে পারতেন না। নোংরা দুর্গন্ধ পোশাক বিধায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিরাপত্তা কর্মীরা পাগলকে উপরের (পূর্ব) গেটের বাইরে ফেলে রাখেন। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত সেখানেই পড়ে ছিলো বিকলাঙ্গ পাগল লোকটি।
ঘটনার দিন- ১৪ জুন-২০২৫ (শনিবার) নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন মিলে অসুস্থ অঙ্গহীন পাগলকে ময়লা ফেলার ঝুড়িতে করে মাজার রোডের পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসেন এবং সেখানেই পাগলটির মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে।
এই ঘটনায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠেন। শাহ আলী থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন এবং তদন্তপূর্বক দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস প্রদান করেন। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় লাশটি দাফন সম্পূর্ণ করা হয়।
এমন একটি জঘন্য ঘটনায় প্রশাসন যেনো নিরব দর্শকের মতো এখনো মুখে কুলুপ এটে বসে আছেন। আসামিদের গ্রেফতারের নেই কোন অগ্রগতি, তদন্তের নামে করছেন কেবলমাত্র কালক্ষেপন।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এই মৃত্যু কোন সাধারণ মৃত্যু নয়, ইহা পরোক্ষ হত্যার সামিল। এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠ বিচার চাই। ন্যাক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
হযরত শাহ আলী মাজার’টি ওয়াকফ সম্পত্তি। ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যে দান করা সম্পত্তি সাধারণত ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং এর থেকে প্রাপ্ত আয় জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হওয়ার বিধান থাকলেও দীর্ঘদিন যাবত চলছে কর্মচারী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের লুটে খাওয়ার প্রতিযোগিতা।