মহিদুল ইসলাম (শাহীন) খুলনা ব্যুরো প্রধান ঃ
খুলনার সাবেক সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও সাবেক মেয়র মনিরুজ্জামান মনি খুলনা বিএনপিতে ৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে আলোচিত রাজনীতিক। গত তিন বছরে সাংগঠনিক কাঠামোতে তাদের অবস্থান নেই। গত সোমবার দলের নগর শাখার সম্মেলনে দাওয়াতও পাননি এ আলোচিত নেতৃত্ব। গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্র আহুত বর্ধিত সভায় তারা আমন্ত্রণ পেয়ে অংশ নেন।
তবে বক্তৃতার সুযোগ ছিল না। এ মূহুর্তে কেন্দ্রের আর্শীবাদের হাত তাদের মাথার ওপর।
২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর থেকে তারা গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ দায়িত্ব হারান। দু’জনের রাজনৈতিক পরিচয় এখন সাবেক। একজন সাবেক সংসদ সদস্য, আরেকজন সাবেক মেয়র। গেল তিন বছরে বিভিন্ন জাতীয় দিবস, দলের প্রতিষ্ঠাতার জন্মদিন পালন, দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, শীত বস্ত্র বিতরণ, জানাজা ও জামিন নিতে তারা আদালতে সরব।
২০২২ সালের ২২ অক্টোবরে স্থানীয় সোনালী ব্যাংক চত্বরে মহাসচিবের উপস্থিতিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী নিয়ে মহাসমাবেশে শো-ডাউন দেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ করতালি দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানান। সেদিন টেলিভিশনের ক্যামেরা থেকে তারা বঞ্চিত হয়নি। সদ্য সমাপ্ত নগর সম্মেলন ও কাউন্সিলে আলোচিত এ নেতৃত্ব আমন্ত্রণ পায়নি। একত্রিশ ওয়ার্ড, পাঁচটি থানা কমিটিসহ ৫০৫ জনের কাউন্সিলরের তালিকায় তাদের অনুসারীরা স্থান পাননি। অনুসারীরা নগর কমিটির বিরোধিতাও করেনি।
পদবঞ্চিত র্শীষ দু’নেতৃত্বের রাজনৈতিক সূচনা মার্কসবাদী দর্শনের পথ বেয়ে। ৪৫ বছর আগে পূর্বের দর্শন ছেড়ে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ এর পতাকাতলে সমাবেত হন। ত্যাগ, শ্রম ও মেধা দেন ১৯ দফা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে। ২০০৯-২০২৪ পর্যন্ত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের জামানায় নাশকতাসহ একাধিক গায়েবী মামলার আসামি হয়েছেন তারা। কারাগারে ও আদালতে সময় দিতে হয়েছে দিনের পর দিন।
সাংগঠনিক কর্মকান্ড ও দলীয় কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখতে দলের এই অংশ নগরীর তেতুলতলা মোড়ে রাজনৈতিক সচিবালয় চালু রেখেছেন। শীর্ষ নেতা সন্ধ্যার পর অবস্থান করেন সুলতান হামিদ আলী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে।
দলের স্থানীয় রাজনীতিতে গত ৪৫ বছরে সাবেক জেলা জজ আমীর আলী জোয়াদ্দার, সাবেক স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলী, সাবেক মেয়র শেখ তৈয়েবুর রহমান, শ্রমিক নেতা মোঃ আশরাফ হোসেন,
এম নুরুল ইসলাম, কাজী সেকেন্দার আলী ডালিমের পর তাদের দু’জনের অবদান স্বীকৃত। সাংগঠনিক কাঠামোতে স্থান না পেলেও ১৯ দফার রাজনীতিতে তাদের ইমেজ অক্ষুন্ন রয়েছে। এ কারণেই তার অনুসারী জাফর উল্লাহ খান সাচ্চু, সিরাজুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা নিজাম উর রহমান লালু, খানজাহান আলী থানার মীর কায়সেদ আলী, দৌলতপুরের শেখ মোশাররফ হোসেন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, খালিশপুরের এড. ফজলে হালিম লিটন,
সোনাডাঙ্গার আসাদুজ্জামান মুরাদ, সদর থানার অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, ইউসুফ হারুন মজনু প্রমুখ এ শীর্ষ দু’ নেতার পিছু ছাড়ছে না। আজকের কেন্দ্রীয় বর্ধিত সভার আমন্ত্রণ পেয়েছেন বলে নজরুল ইসলাম মঞ্জু জানান। বক্তৃতার সুযোগ ছিল না। নগর শাখার কাউন্সিল সম্পর্কে বলেছেন এটি ছিল ‘পাতানো ও সাজানো’।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে কিছু বিষয় আড়াল করা হয়েছে। দলকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে এবং উপদল সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করতে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে পাঁচ পাতার একটি চিঠি দু’বছর আগে পাঠান।