মো. আশরাফুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার
গতকাল দিনে দুপুরে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক জেলা পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তের একপর্যায়ে সন্দেহের তীর যেন অভিযোগ কারীর দিকে অবশেষে বেরিয়ে এলো থলের বিড়াল রহস্যময় ঘটনার চাঞ্চল্যকর তথ্য উন্মোচন করেন । পুলিশের সুদক্ষতায় বেরিয়ে এলো আসল সত্য । দিনে দুপুরে ছিনতাই ঘটনার অভিযোগকারী ঋণ পরিশোধ এড়াতে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে অবশেষে ধরা খেলেন পুলিশের জালে ।
দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হোসেন রহস্যময় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন - দিনাজপুর জেলার বিরল থানায় "দিনে দুপুরে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ছুটে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গত ২৫ জুন (বুধবার) দুপুর ২টায় দিনাজপুর জেলার বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সংবাদ পান যে, বিরল থানাধীন বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন ব্রিজে এক ব্যবসায়ীর ৩৪ লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছে। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবগত করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভিকটিম গোপালপুর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে মোঃ মইনুল ইসলাম (৫৫) কান্না জড়িত কন্ঠে জানান যে, তিনি বাড়ি থেকে ২৬ লক্ষ টাকা এবং এনআরবিসি ব্যাংক বিরল শাখা হইতে ৮ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে সর্বমোট ৩৪ লক্ষ টাকা নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে ঋণ পরিশোধের জন্য অগ্রণী ব্যাংকে স্টেশন রোড শাখা দিনাজপুরে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বিরল থানাধীন বানিয়াপাড়া রেলগেট সংলগ্ন ব্রিজের নিকট পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারীরা তার পথ রোধ করে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।
রহস্যময় ঘটনার সংবাদ পেয়ে পুলিশ সুপার সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অতঃপর পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইন এর নেতৃত্বে তদন্ত টিম অর্থসংশ্লিষ্ট স্থান সমূহে নানা কৌশলে অনুসন্ধান করেন। পুলিশের চৌকস অনুসন্ধানে তদন্ত টিম বুঝতে পারেন যে, মোঃ মইনুল ইসলাম ব্যবসা জনিত কারণে ব্যাংক সহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিকভাবে ঋণগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া বা ঋণ পরিশোধের সময় পাওয়ার আশায় কৌশলে টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছেন। অনুসন্ধানের একপর্যায়ে তদন্ত টীম মোঃ মইনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে তার বাড়ি তল্লাশি করার জন্য রওনা হলে তিনি ভুল স্বীকার করে তার টাকা ছিনতাইয়ের সাজানো নাটকের কথা স্বীকার করেন।
এরপর ভিকটিম এর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তদন্ত টিম মোঃ মইনুল ইসলাম তার বাড়ি সংলগ্ন অফিস ঘর থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ, মোটরসাইকেলের চাবি ও ব্যাংক থেকে উত্তোলনকৃত ৮ লক্ষ টাকা সহ মোট ১১ লক্ষ টাকা তদন্ত টিমের নিকট প্রদান করেন। নিরাপত্তা জনিত কারণে মোঃ মাইনুল ইসলামের ইচ্ছায় ১১ লক্ষ টাকা থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। মোঃ মাইনুল ইসলামের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সাজানো নাটক ছিল। ঋণ পরিশোধের ব্যর্থতায় সাজানো নাটক ও পুলিশকে হয়রানি করায় যথাযোগ্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নজরুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক এন আই নবী। খুলনা অফিসঃ ৬/১ পাবলা কেশবলাল রোড, দৌলতপুর, খুলনা। মোবাইলঃ ০১৭১৩৭০৮১৯
Copyright © 2025 বাংলার চেতনা. All rights reserved.