মোঃ আশরাফুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার বাংলার চেতনা নিউজ।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পাশে পরিত্যক্ত এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (ডেটোনেটর) বিস্ফোরণে এক শিশুর ডান হাতের কব্জি উড়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামে।
আহত শিশুর নাম ইলিয়াস আলী (১০)। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নাজরা শ্রেণির শিক্ষার্থী ও চৌহাটি গ্রামের বাসিন্দা মো. আশরাফুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার দিকে ইলিয়াস কয়লাখনি এলাকার ডাম্পিং এলাকা থেকে সে একটি ধাতব বস্তু পেয়ে কৌতূহলবশত তা নাড়াচাড়া করে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মোবাইলের নষ্ট ব্যাটারির সাথে সংযোগ দিলে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে তার ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত হয়।
পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
জানা যায়, কয়লা খনির প্রাচীর ঘেঁষে তার কাঁটা দিয়ে ঘেরা খনির ডাম্পিং এরিয়া। এখানে খনির বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলা হয়। এসব বর্জ্য থেকে কয়লার সন্ধানে এলাকার লোকজন ওই ডাম্পিং এরিয়ায় প্রবেশ করে যতসামান্য কয়লা পেয়ে থাকে। এসব বর্জ্যর সাথে পাওয়া মাঝে মাঝে মেলে এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস। পাশের গ্রাম চৌহাটির অনেকেই এই ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়ে ওইসব এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস পেয়ে থাকে। তারা এর বিশদ কিছু জানে না। অনেক সময় এসব বাড়িতে ফেলে রাখে।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ভূগর্ভস্থ একজন শ্রমিক বলেন, এগুলো ডেটোনেটর। খনির অভ্যান্তরে বা ভূগর্ভে যেসব স্থানে মেশিন দিয়ে কয়লা কাটা সম্ভব হয়না। সেইসব স্থানে এসব ডেটোনেটর স্থাপন করে বিস্ফোরন ঘটিয়ে কয়লা সংগ্রহ করা হয়।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন, খনি এলাকার পুরনো বিস্ফোরক উপাদান ও পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি অপসারণে প্রশাসনের আরও তৎপরতা দরকার, যেন এমন দুর্ঘটনা আর না ঘটে। এসব দ্রব্য কিভাবে সহজেই মানুষের কাছে পৌছে যাচ্ছে সেটাও দেখা দরকার খনি কর্তৃপক্ষের।
এদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো. জাফর সাদিক জানান, এটি ডেটোনেটর। খনির ভূগর্ভে কয়লা উত্তোলনের ক্ষেত্রে বিস্ফোরনের কাজে ব্যবহার করা হয়। এগুলো খুবই স্পর্শ কাতর। এগুলো কোনটি অকেজো এবং কোনটি তাজা তা সাধারণ ভাবে কেউ বুঝতে পারার কথা নয়। তাছাড়া বাহিরের প্রাপ্ত ডেটোনেটরে কোন সংযোগ নেই। তবে এগুলো ডাম্পিং পয়েন্ট থেকেই কোন না কোন ভাবে ধাতব বস্তু হিসেবে গ্রামবাসী সংগ্রহ করেছে। বিষয়টি আগে কেউ আমাদের নজরে আনেনি। ঘটনার পর আমরা জনতে পেরে বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এই কর্মকর্তা আরও বলেন বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আহত শিশুর বিষয় তিনি বলেন, আগে তার চিকিৎসা চলুক। পরে তার বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সর্বোচ্চ সহযোগীতা করবে এবং পাশে থাকবে।।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নজরুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক এন আই নবী। খুলনা অফিসঃ ৬/১ পাবলা কেশবলাল রোড, দৌলতপুর, খুলনা। মোবাইলঃ ০১৭১৩৭০৮১৯
Copyright © 2025 বাংলার চেতনা. All rights reserved.