সাকিল শরিফঃ
-----------
ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নীরব সাক্ষী খুলনার দৌলতপুরের মহসীন স্কুল সংলগ্ন 'ডেপুটি বাড়ি' হিসাবে খ্যাত 'মির্জা মহল'- এর ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ২৫-২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ তিনদিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন করা হয়- দৌলতপুরে। দৌলতপুরের কৃতী সন্তান তদানীন্তন বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা ইব্রাহীম হোসেন ১৯২৪ সালে অনন্য স্থাপত্যশৈলীর এই দ্বিতল ভবনটি তৈরি করেন।দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা মির্জা বাড়ির চার প্রজন্মের তিন শতাধিক অংশগ্রহণকারীর মিলন মেলায় পরিণত হয়-- মির্জা মহলের ১০০ বছর পূর্তি উৎসব।
২৫ ডিসেম্বর সকালে রেলি ও প্রয়াতদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।বিকেলে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য..।খুলনার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উপপরিচালকসহ স্হানীয় গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা মহলের বংশ পরম্পরার ' ফ্যামিলি ট্রী' এবং ওয়েবসাইট উন্মোচনের পর একটি 'থিম সং' -এর মাধ্যমে প্রথম দিনের অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে মধ্যরাত পর্যন্ত।
দ্বিতীয় দিন ২৬ ডিসেম্বর স্মৃতিচারণা, খেলাধুলা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চলে দিনব্যাপী উৎসব।
পুরনো ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে জানার মধ্য দিয়ে একটি জাতির সাংস্কৃতিক বিকাশ ত্বরান্বিত হয়, 'মির্জা মহল' শুধু স্হাপত্যশৈলীর কারণে নয়, এর বাসিন্দাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে কৃতিত্বপূর্ণ বর্ণাঢ্য কার্যক্রমের কারণেও একটি শতাব্দী -প্রাচীন স্মৃতি-স্মারক-- বলে উল্লেখ করেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।মরহুম মির্জা ইব্রাহীম হোসেনের ১৭ সন্তানের সকলেই প্রতিষ্ঠিত অধ্যাপক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, অনেকে প্রয়াত, যাঁরা বেঁচে আছেন, কেউ দেশে কেউ বিদেশে ইংল্যান্ড, কানাডা, স্পেনে-- স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। একটি পরিবারের পরিমন্ডলে এত গুনীমানুষের সমাহার 'মির্জা মহলের' ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে --তাই এটি শুধু একটি স্হাপনাই নয়-- একটি শিক্ষা -সংস্কৃতি বিকাশের সূতিকাগার।
২৭ ডিসেম্বর পুরস্কার বিতরন, স্মারক সম্মাননা প্রদান ও রেফেল ড্র এর মধ্য দিয়ে শেষ হয়- তিনদিন ব্যাপী পারিবারিক ঐতিহ্যের মিলনমেলা।একটি স্হাপনাকে ঘিরে --- ৪-৫ প্রজন্মের এই ধরনের আয়োজন নজিরবিহীন বলে এলাকায় বেশ আলোড়ন তোলে।'তোমার আলোকে জাগিয়া রহিব'-- শীর্ষক শতবর্ষ স্মারক প্রকাশনাটিতে পরিবারের বাইরেও বিভিন্ন স্বনামধন্য ব্যাক্তিবর্গ লিখেছেন, স্মৃতিচারণ করেছেন, জানা গেছে মির্জা ইব্রাহীম সাহেবের ওমর খৈয়াম অনুবাদের ইতিহাস--- কবি জসীমউদ্দিনের সংগে বন্ধুত্ব ও সখ্যের কাহিনী।
ঐতিহ্যবাহী মির্জা মহলের কৃতী সন্তানদের অবদান পরম্পরার হাত ধরে দৌলতপুরের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে ভবিষ্যতেও -- এই প্রত্যাশা স্হানীয় জনসাধারণের।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ নজরুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক এন আই নবী। খুলনা অফিসঃ ৬/১ পাবলা কেশবলাল রোড, দৌলতপুর, খুলনা। মোবাইলঃ ০১৭১৩৭০৮১৯
Copyright © 2025 বাংলার চেতনা. All rights reserved.